সাতক্ষীরায় আম সংগ্রহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

whatsapp sharing button

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: আমের গুনগত মান বজায় রেখে নিরাপদে আম বাজারজাত করতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের বেধে দেওয়া নির্ধারিত সময় অনুযায়ী জেলায় আম সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনায় সোমবার (৫ মে) থেকে জেলাব্যাপী গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাসসহ স্থানীয় জাতের আম গাছ থেকে আম ভাঙা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। পর্যায়ক্রমে ভাঙা হবে হিমসাগর, আম্রপালি ও ল্যাংড়া আম।
প্রথমদিনে বাজারে আম বিক্রি হয়েছে ১৮’শ থেকে ২৪’শ টাকা মণ।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা ফিংড়ী ইউনিয়নের বিল্লাল হোসেনের আম বাগান থেকে আম আহরণের মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহের উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।

এসময় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার প্লাবনী সরকারের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মনির হোসেন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার প্রণয় বিশ্বাস, তাজুল ইসলাম ও আহসান হাবীবসহ বিভিন্ন গণমাধমের সাংবাদিকবৃন্দ।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে ৫ হাজারের অধিক। ১৩ হাজার চাষি আম চাষের সাথে জড়িত। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ হাজার ৮০০ মেট্রিকটন। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০০ কোটি টাকা।
তবে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ জানাচ্ছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, সাতক্ষীরায় একটি মাত্র বড় বাজার থাকায় সবাইকেই সেখানেই আম বিক্রি করতে হয়। যেখানে সিন্ডিকেটের আধিপত্য সবসময় বিরাজমান থাকে।এতে যেমন চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, তেমন আম বাগান কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা।

কৃষকদের দাবি, কয়েকটি বাজার চালু হলে এবং খোলা মাঠে ভ্রাম্যমাণ পাইকারি বাজার বসলে ভালো দাম পাওয়া যেত। জেলা প্রশাসনের প্রতি তারা এই বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

এরআগে গত ৩০ এপ্রিল সরকারি কর্মকর্তা ও আম ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় জেলায় আম ভাঙার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন। সেখানে ৫ মে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বায়, ক্ষীরশাপাতি, গোলাপখাস ও বৈশাখীসহ অন্যান্য স্থানীয় জাতের আম, ২০ মে হিমসাগর, ২৭ মে ল্যাংড়া ও ৫ জুন আম্রপালি আম ভেঙে বাজারে তোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘সাতক্ষীরার আমই দেশের বাজারে সবচেয়ে আগে পাকে। এই কারণে এর চাহিদাও সবচেয়ে বেশি। এ জেলার আমের স্বাদ অতুলনীয়।’

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘চলতি বছর প্রায় ৪০০ কোটি টাকার আম বিক্রি ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কোনোভাবেই যেন কেমিক্যাল বা ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার করে আম পাকানো না হয়, সে বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।’ অপরএক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সিন্ডিকেট বলে কিছু থাকবে। জেলা প্রশাসন সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার গড়তে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে।’