ঈদ উপলক্ষে শ্যামনগরে ১৩ ব্যাংকে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি টাকাসাতক্ষীরা প্রতিনিধি: উপকূলের সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ১৩টি ব্যাংকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি টাকার উর্ধে।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বলে অনেক ব্যাংক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন। সারা বছর জুড়েই প্রতিটি ব্যাংকে রেমিট্যান্স আসে। তবে কোন উৎসব উপলক্ষে একটু বেশি আসে বলে জানা যায়।
শ্যামনগর উপজেলা সদরের ১৩টি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের প্রদানকৃত তথ্য অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৪ কোটি ৪৯ লক্ষ ৯ হাজার ১৬০ টাকা। মার্চ মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৫ কোটি ২ লক্ষ ৭০ হাজার ৮২২টাকা। দুই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে সর্বমোট ৯ কোটি ৫১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৯৮২ টাকা। ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, অনেক ব্যাংকে কোন মাধ্যম ছাড়া সরাসরি হিসাব নম্বরে টাকা প্রেরণ ও কেন্দ্রিয়ভাবে হিসাব সংরক্ষণ করার কারণে সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারেননি। সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারলে রেমিট্যান্সের পরিমান আরও বেশি হবে বলে জানান।
প্রাপ্ত ১৩টি ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড শ্যামনগর শাখায় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে দুই মাসে ৫ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি শ্যামনগর শাখায় ১ কোটি ২০ লক্ষ ৭ হাজার টাকা।
ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের তথ্য মতে, উপজেলার ১৩টি ব্যাংকের রেমিট্যান্স এসেছে। সোনালী ব্যাংক পিএলসির শ্যামনগর শাখার ম্যানেজার প্রশান্ত ব্যানার্জী জানান ফেব্রুয়ারী মাসে ২৮ লক্ষ ৮৮ হাজার ও মার্চ মাসে ১০ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা এসেছে। অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি ম্যানেজার মো. আব্দুল্লাহ জানান ফেব্রুয়ারি মাসে ২১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৭৬ টাকা ও মার্চ মাসে ২২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫৮১ টাকা এসেছে। ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ম্যানেজার মো. জাফর ইকবাল এভিপি জানান ফেব্রুয়ারি মাসে ৭০ লক্ষ টাকা ও মার্চ মাসে ৫০ লক্ষ ৭ হাজার টাকা এসেছে। ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটিডের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫ লক্ষ ৭৪ হাজার ১০৩ টাকা ও মার্চ মাসে ১৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৪৬০ টাকা এসেছে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজার আব্দুল আজিজ জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে ২ কোটি ৪৪ লক্ষ ও মার্চ মাসে ৩ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা বিদেশ থেকে এই ব্যাংকের শাখায় জমা হয়েছে। জনতা ব্যাংক পিএলসির ম্যানেজার শেখ শামিম হোসেন জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে ১৬ লক্ষ ৮৭ হাজার ৮৭৪ টাকা ও মার্চ মাসে ১৭ লক্ষ ৯২ হাজার ৩৮০ টাকা এসেছে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শ্যামনগরের ম্যানেজার অরুণ কুমার মন্ডল জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে ৩১ লক্ষ ২০ হাজার ও মার্চ মাসে ২৫ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা এসেছে। এসবিএসি পিএলসির ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, ফেব্রুয়ারি মাসে ৩ লক্ষ ও মার্চ মাসে ২লক্ষ টাকা এসেছে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ম্যানেজার মো. জাবির হোসেন বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১ লক্ষ ১৬ হাজার ও মার্চ মাসে ১ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা এসেছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির কাস্টমার সার্ভিস অফিসার হাসান নুর বারী জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে কোন রেমিট্যান্স না এলেও মার্চ মাসে ১লক্ষ ৯হাজার টাকা এসেছে। আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ম্যানেজার মো. জামির হোসেন বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে ২ লক্ষ ৪০ হাজার ও মার্চ মাসে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ১৪২ টাকা এসেছে। রুপালী ব্যাংক পিএলসি নওয়াবেঁকী শাখার দ্বিতীয় কর্মকর্তা পবিত্র কুমার মন্ডল জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে ২ লক্ষ ৮৫ হাজার ২০৭ টাকা ও মার্চ মাসে ২ লক্ষ ৫১ হাজার ২৫৯ টাকা ও এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির ম্যানেজার জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে ১লক্ষ ও মার্চ মাসে ১লক্ষ টাকা রেমিট্যান্স এসেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তাবৃন্দ সুত্রে প্রকাশ রেমিট্যান্স আসার মাধ্যমগুলি হলো ট্রান্সফাস্ট, এক্সপ্রেসমানি, মানিগ্রাম, রিয়া, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, স্পট ক্যাশ, আইএমই, কুইকপে, এ্যারোবিয়ান এক্সচেঞ্জ, এনইসিপি, এনবিএল, আলমামলা প্রমুখ।
উপজেলার ব্যাংকগুলিতে যেসকল দেশ থেকে রেমিট্যান্স এসেছে সেসকল উল্লেখযোগ্য দেশগুলি হলোÑইউএসএ, সৌদি আরব, ইটালী, মালেশিয়া, ওমান, কুয়েত, ইউরোপ, মালদ্বীপ, সিংগাপুরসহ অন্যান্য।
রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি প্রধান চালিকা শক্তি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশি অভিবাসীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে দেশের সাথে সাথে এই উপজেলায়ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিজ্ঞরা মন্তব্য করেন।