খুলনায় গৃহবধুকে হত্যার ঘটনায় ৩ জন গ্রেপ্তার

whatsapp sharing button

খুলনা: জেলার তেরখাদা থানাধীন বিজয়নগর গ্রামের একটি কলাবাগনে রোববার সকালে অজ্ঞাতনামা একজন মহিলার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। পুলিশকে খবর দিলে অজ্ঞাতনামা মৃতদেহটি হেফাজতে নেয় । এ ঘটনায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ হাফিজুর রহমান এর নেতৃত্বে তেরখাদা থানা পুলিশের একটি দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নড়াইল জেলার কালিয়া থানা এলাকা হতে রনিচ সরদার (৪০), আঙ্গুরা বেগম (৩০) এবং আকছির সরদার (৫৫)নামে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।  

খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শেখ ইমরান সোমবার (২৪ মার্চ) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রোববার সকালে তেরখাদা থানাধীন বিজয়নগর গ্রামের একটি কলাবাগনে অজ্ঞাতনামা একজন মহিলার মৃতদেহ পড়ে আছে মর্মে সংবাদ পেয়ে তেরখাদা থানা পুলিশ। পরে অজ্ঞাতনামা মৃতদেহটি হেফাজতে নেয় । একই সাথে অপরাধের সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করে। 

জানা যায়, গত ২০০৮ সালে ভিকটিম মোসাঃ সাকিরন বেগমের (৪৫) স্বামী মৃতুবরণ করলে ভিকটিম তার তিন সন্তানকে নিয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানাধীন বয়রায় তার ভাইয়ের বাসায় চলে আসে। খুলনায় থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালে আনিচ সরদার এর সাথে ভিকটিমের পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। উক্ত সম্পর্কের প্রেক্ষিতে গত ২০১৮ সালে আনিচ সরদারের সাথে ভিকটিম মোসাঃ সাকিরন বেগম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের একপর্যায়ে আনিচ সরদার ভিকটিমকে সৌদি আরবে পাঠানোর প্রলোভন দেখায়। ভিকটিম আনিচ সরদারের কথায় রাজি হয়ে তার গচ্ছিত টাকা দিয়া ২০১৯ সালে সৌদি আরবে যায় এবং সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় আনিচ সরদারকে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট তিন লাখ চল্লিশ হাজার টাকা প্রেরণ করে। পরবর্তীতে গত ২০২০ সালে ভিকটিম মোসাঃ সাকিরন বেগম দেশে ফিরে আসে এবং জানতে পারে আনিচ সরদার গ্রেফতারকৃত আঙ্গুরা বেগমকে বিবাহ করেছে। ভিকটিম আনিচ সরদার নিকট স্ত্রীর মর্যাদা দাবী করলে আনিচ সরদারসহ গ্রেফতারকৃতরা তাকে অস্বীকার করে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। বিষয়টি ভিকটিম তার ভাইসহ স্থানীয় লোকজনদের জানালে তাদের মধ্যস্থতায় আনিচ সরদার গতবছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমকে তিন লাখ টাকা ফেরত দেবে মর্মে অঙ্গীকার করে। এর প্রেক্ষিত গত ২২ মার্চ বিকালে ভিকটিম মোসাঃ সাকিরন বেগম টাকা নেওয়ার জন্য নড়াইল জেলার কালিয়া থানায় আনিচ সরদারের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। একই তারিখ রাতে ভিকটিমের মেয়ে তানজিলা আক্তারকে আনিচ সরদার ফোন করে জানায় যে, তার মা ভিকটিম মোসাঃ সাকিরন বেগম টাকা চাইতে ও স্ত্রীর মর্যাদা দাবী করতে তার কাছে গেছে এর ফলে ভিকটিমকে আনিচের ভাই, মা, স্ত্রী ও শ্বশুরসহ সকলে মারপিট করে অজ্ঞান করে রাখছে। তাকে এসে না নিয়ে গেলে তারা ভিকটিমকে খুন করে ফেলবে। তার পর হতে ভিকটিমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং গত ২৩ মার্চ সকালে খুলনা জেলার তেরখাদা থানাধীন বিজয়নগর গ্রামের একটি কলাবাগনে ভিকটিমের মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়।

এই ঘটনায় তেরখাদা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।