কোনো বইয়ের প্রচার নিষিদ্ধ না করে তাকে বরং জনমতের সঙ্গে সংগ্রাম করে টিকে থাকার সুযোগ দেওয়া উচিত,’ বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিচারক কুটিক রক। ১৯৪৮ সালে অশ্লীলতার প্রশ্নে একটি মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ালে রায় দিতে গিয়ে কথাটি উল্লেখ করেন তিনি। কথা সত্যও বটে! বই আসলে জনমতের সঙ্গে সংগ্রাম করেই টিকে থাকে। যেমন আজ থেকে শতবর্ষ আগে কাজী নজরুল ইসলামের বিষের বাঁশী ও ভাঙার গান বই দুটি নিষিদ্ধ করেছিল ব্রিটিশ সরকার। বই ও লেখালেখি নিয়ে ব্রিটিশদের মনোভাব ছিল কঠোর। ব্রিটিশ শাসনামলে বাজেয়াপ্ত বই নিয়ে গবেষণা করেছেন বিষ্ণু বসু, অশোক কুমার মিত্র প্রমুখ। শিশির কর এ ক্ষেত্রে এক কিংবদন্তি। নিষিদ্ধ নজরুল আর ব্রিটিশ শাসনে বাজেয়াপ্ত বাংলা বই নামের দুই গ্রন্থ লিখে সাহিত্যের ইতিহাসে প্রণম্য হয়ে আছেন তিনি। ব্রিটিশ শাসনে বাজেয়াপ্ত বাংলা বইয়ে তিনি জানাচ্ছেন, ‘ইংরেজ আমলে ভারতের প্রায় সব প্রাদেশিক ভাষার গ্রন্থই রাজরোষে পড়েছে।’ এ কথা থেকে প্রমাণিত হয় যে ব্রিটিশ সরকার বই ও তার প্রভাব নিয়ে কতটা চিন্তিত ছিল। বই আর লেখালেখি নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা প্রণয়ন করেছিল কয়েকটি আইন। ইন্ডিয়ান প্রেস অ্যাক্ট ১৯১০, নিউজপেপার অ্যাক্ট ১৯০৮, সেডিশিয়াস পাবলিকেশন্স অ্যাক্ট ১৮৮২, ইন্ডিয়ান প্রেস ইমার্জেন্সি পাওয়ার অ্যাক্ট ১৯৩০ প্রভৃতি।